ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণিগাছ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন
ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি: পরিবেশ সুরক্ষায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ
ঢাকা: দেশের পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ইউক্যালিপটাস (Eucalyptus) এবং আকাশমণি (Acacia auriculiformis) গাছের চারা উৎপাদন, সংগ্রহ ও বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
বুধবার (১৫ মে, ২০২৫) প্রকাশিত এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এখন থেকে সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি পর্যায়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই দুটি বিদেশি প্রজাতির পরিবর্তে দেশীয় ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ লাগাতে হবে।
কেন এই নিষেধাজ্ঞা?
পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রজ্ঞাপনে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ নিষিদ্ধ করার পেছনে একাধিক কারণ উল্লেখ করা হয়েছে:
* ভূগর্ভস্থ পানি শোষণ: এই গাছগুলো অত্যধিক পরিমাণে ভূগর্ভস্থ পানি শোষণ করে। এর ফলে মাটির আর্দ্রতা কমে যায় এবং শুষ্ক ও মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
* মাটির উর্বরতা হ্রাস: এই গাছগুলোর পাতা বিষাক্ত উপাদান ধারণ করে। যখন এই পাতা মাটিতে পড়ে, তখন আশেপাশের মাটিকে অনুর্বর করে তোলে এবং অন্যান্য দেশীয় প্রজাতির গাছপালার বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
* জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি: এই গাছগুলো স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি বড় হুমকি। দেশীয় অনেক উদ্ভিদ, পতঙ্গ ও পাখি এই গাছগুলোতে আশ্রয় বা খাবার খুঁজে পায় না, যা বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট করে।
জনসাধারণের ভূমিকা
মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রজ্ঞাপনে সবাইকে দেশীয় প্রজাতি রোপণে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য বন বিভাগকে নিয়মিত তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে, নিষেধাজ্ঞার পরেও দেশের কিছু অঞ্চলে এখনও এই গাছের চারা বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। অনেক নার্সারি মালিক জানিয়েছেন, তারা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে অবগত ছিলেন না এবং তাদের কাছে প্রচুর পরিমাণে চারা রয়ে গেছে।
পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারের এই পদক্ষেপকে আপনি কীভাবে দেখছেন? এই নিষেধাজ্ঞা কি সত্যিই পরিবেশের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আপনার মনে হয়?
0 Comments
Leave your commets here